বছর ঘুরে আবারও এসেছে রহমত, বরকত ও নাজাতের মাস পবিত্র মাহে রমজান। মধ্যপ্রাচ্যসহ বিশ্বের বেশ কিছু দেশে এরইমধ্যে শুরু হয়ে গেছে রোজা পালন। এই এক মাস সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সবধরনের পানাহার থেকে বিরত থাকবেন রোজাদাররা। শত শত বছর ধরে এই নিয়ম পালন করে আসছেন মুসলিমরা। তবে ইসলাম ধর্মের অনুসারী না হয়েও গত ১২ বছর ধরে প্রতি রমজানে রোজা পালন করছেন এক অমুসলিম নারী।
নাম ডা. জেরামি উমালি। স্বদেশ ফিলিপাইনে হলেও গত চার বছর যাবৎ সংযুক্ত আরব আমিরাতে রয়েছেন তিনি। এর আগে আট বছর ছিলেন সৌদি আরবে।
দীর্ঘদিন মুসলিম দেশে থাকায় মুসলিম রীতিনীতি ভালোই শিখে গেছেন ডা. উমালি। ফলশ্রুতিতে তার অভ্যাস-আচরণেও এসেছে পরিবর্তন। খ্রিষ্টান ধর্মানুসারী হয়েও ১২ বছর ধরে প্রতি রমজানে মুসলিমদের মতো রোজা রাখছেন তিনি। দীর্ঘদিন রোজা পালন করতে থাকায় এটি এখন অভ্যাসে পরিণত হয়েছে তার।
ডা. উমালি সংবাদমাধ্যম খালিজ টাইমস’কে জানিয়েছেন, সৌদি আরবে ডেন্টিস্টের কাজ করতেন তিনি। শুরুর দিকে বুঝতে পারতেন না, সৌদির লোকেরা দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় কেন কিছু খান না। কিন্তু শিগগির রোজা রাখার কারণ ও এর উপকারিতার প্রশংসা করতে শুরু করেন এ চিকিৎসক।
তিনি বলেন, আমি যখন সৌদি আরবে ডেন্টিস্ট হিসেবে কাজ করতাম, তখন দেখতাম, আশপাশের মুসলিম সহকর্মীরা (রমজানে) খাবার ও পানীয় থেকে বিরত থাকে। আমি প্রথমে আশ্চর্য হতাম। কিন্তু দ্রুতই এই রীতি সম্পর্কে জেনে যাই।
রোজা রাখার অভ্যাস প্রসঙ্গে ফিলিপিনো এ নারী বলেন, সৌদি আরবে আট বছর কাজ করার পর আমি ২০১৯ সালে আমিরাতে আসি। কিন্তু এখানে এসেও আমি রোজা রাখা চালিয়ে গেছি।
খ্রিষ্টান ধর্মানুসারী ডা. উমালি বলেন, আমি রমজানে ৩০ দিনই রোজা রাখি। যথাসম্ভব পানি পান থেকে বিরত থাকি। গত তিন বছর রমজানের সময় প্রায়ই লেন্টের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। লেন্ট চলাকালে অনেক খ্রিষ্টান ধর্মানুসারী উপবাস করেন। এটিকে ‘লেন্টেন স্যাক্রিফাইস’ বলা হয়।
তিনি বলেন, রমজান মাস হলো নিজের উন্নতি, উদারতা ও আধ্যাত্মিকতার জন্য একটি বিশেষ সময়। তবে এটি মানুষের স্বাস্থ্যের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। এটি ওজন কমাতে সাহায্য করে এবং সামগ্রিক ফিটনেসের উন্নতি ঘটায়। এটি মুসলিম বন্ধু ও সহকর্মীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা এবং বন্ধুত্বও বাড়িয়ে দেয়।
Leave a Reply