বরগুনার পাথরঘাটায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে হোটেলে নিয়ে ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকৃত ওই শিক্ষক বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার আনোয়ার হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আঃ জব্বার হোসেন খান (৫৭)।
অবসরে যেতে ওই শিক্ষক আর তিন বছর বাকী রয়েছে বলে জানা গেছে। ঘটনার সত্যতা প্রমাণিত পাওয়ায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জরুরি সভা আহবান করে বুধবার (২৬ এপ্রিল) প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে। ঘটনার পর থেকে ওই শিক্ষক পলাতক রয়েছেন।
ভুক্তভোগী ছাত্রী গত রবিবার (২৩ এপ্রিল) পাথরঘাটা পৌর মেয়র ও বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ আনোয়ার হোসেন আকনের কাছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির লিখিত অভিযোগ করেন।
এছাড়াও পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুফল চন্দ্র দে এর নিকট প্রধান শিক্ষকের অপকর্মের কথা তুলে ধরে জবানবন্দি প্রধান করে ভুক্তভোগী ছাত্রী ও তার বাবা।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে তার মুঠোফোনে একাধিক বার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা বলেন, পঞ্চম শ্রেণি পাস করার পর মেয়েকে আনোয়ার হোসেন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করি। নবম শ্রেণিতে ওঠার পর ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার নানা কৌশলে আমার মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে। গত ১৩ মার্চ স্কুলে শিক্ষা সফরের কথা বলে আমার মেয়েকে বরিশালে নিয়ে দোয়েল আবাসিক হোটেলে রাত্রীযাপনও করেন। বরিশাল থেকে ফেরার পর মেয়ের শারীরিক অসুস্থতা দেখে তার কাছে জানতে চাইলে মেয়ে সব ঘটনা খুলে বলে। সম্মান রক্ষায় প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বারকে আমার মেয়ের জন্য বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি বাল্যবিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান। পরে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে বিচার চেয়ে অভিযোগ করেছি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি তরিকুল ইসলাম রেজা সোনালীনিউজকে বলেন, এ ধরনের জঘন্য কাজ যারা করেন তারা দুষ্ট প্রকৃতির। এদের কারণেই শিক্ষক সমাজের মান ক্ষুন্ন হয়। ঘটনা যদি সত্য হয় তবে এর তীব্র নিন্দা জানাই।
বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও পৌর মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন সোনালীনিউজকে বলেন, বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বুধবার ব্যবস্থাপনা কমিটি ও শিক্ষকদের নিয়ে জরুরি সভা করা হয়েছে। ওই সভায় প্রধান শিক্ষক আব্দুল জব্বার খানকে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুফল চন্দ্র গোলদার বলেন, ওই ছাত্রী ও তার অভিভাবক আমার কাছে এসে ঘটনা জানিয়েছে। ঘটনা শুনে বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে ও তাদেরকে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। ওই ছাত্রীকে আইনি পরামর্শের জন্য থানায় যেতেও বলা হয়েছে।
Leave a Reply