জাতীয় পরিষদে আস্থা ভোটে জয় পেয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ।
বৃহস্পতিবার (২৭ এপ্রিল) ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির আস্থা ভোটে ১৮০ জন সদস্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তার নেতৃত্বের ওপর ‘পূর্ণ আস্থা’ প্রকাশ করেছেন।
পাকিস্তানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, জাতীয় পরিষদে রেজ্যুলেশন উত্থাপন করেন পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) চেয়ারম্যান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারি। প্রস্তাবে শাহবাজ শরিফের পক্ষে ‘হ্যাঁ’ ভোট দেন পরিষদের ১৮০ সদস্য। নির্বাচন ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে সরকার যখন দ্বন্দ্বে, এর মধ্যেই এ জয় পেলেন শাহবাজ।
রেজ্যুলেশনে বলা হয়, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রকাশ করছে ইসলামিক প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদ।
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর খাইবার পাখতুনখাওয়া ও পাঞ্জাব প্রদেশে নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনকে অর্থ দেয়ার বিল পার্লামেন্টে তোলা হয়। কিন্তু জাতীয় পরিষদ নামে পরিচিত পার্লামেন্ট তা প্রত্যাখ্যান করে। এরপরই প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা ভোট হয়।
নির্বাচন কমিশনকে অর্থ দেয়ার বিল প্রত্যাখ্যাত হওয়ার পর পরই পাকিস্তানের ইতিহাসে দৃশ্যত প্রথমবার শীর্ষ আদালত ইঙ্গিত দেন যে, প্রধানমন্ত্রীর ওপর আস্থা নেই জাতীয় পরিষদের।
এ বিষয়ক রায়ে সুপ্রিম কোর্ট বলে, সংবিধান অনুযায়ী পার্লামেন্টারি গণতন্ত্রে সব সময়ই জাতীয় পরিষদের সংখ্যাগরিষ্ঠ আস্থা প্রয়োজন প্রধানমন্ত্রীর। এর আগে ২০২১ সালের ৬ই মার্চ নিম্নকক্ষে ১৭৮ ভোটে আস্থা অর্জন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান।
সংখ্যাগরিষ্ঠতা প্রমাণের জন্য যে সংখ্যক সদস্যের ভোট প্রয়োজন তিনি তার থেকে ৬ ভোট বেশি পেয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার আস্থা ভোটে টিকে যাওয়ার পর জাতীয় পরিষদে ভাষণ দেন শাহবাজ শরীফ। এ সময় তার ওপর পুনর্বার আস্থা প্রকাশ করার জন্য জোটের অংশীদারদের ধন্যবাদ জানান তিনি।
শাহবাজ বলেন, পাকিস্তান এখন গুরুত্বর সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে পাকিস্তানের অর্থনীতি সমৃদ্ধ হচ্ছিল। এ সময় তিনি দেশে অর্থনৈতিক সংকটের জন্য পিটিআই নেতৃত্বাধীন সাবেক সরকারের ওপর দায় চাপান। তিনি বলেন, পুরো বিশ্ব জানে ২০১৮ সালের নির্বাচনের ফল ছিল সাজানো। আমরা যখন নির্বাচনের ফল চ্যালেঞ্জ করি, তখন সাবেক প্রধান বিচারপতি সাকিব নিসার ভোট গণনা বন্ধ করে দেন।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে বিদেশী ষড়যন্ত্রতত্ত্বের বর্ণনা দিয়ে শাহবাজ শরীফ বলেন, বর্তমান সরকার সস্তায় রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে। শিগগরই এই চালান দেশে আসবে। ইমরান খান বলেছেন বর্তমান সরকার বিদেশি সমর্থনপুষ্ট ষড়যন্ত্রের ফল। যদি তাই হতো, তাহলে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করা যেতো না। এখন পার্লামেন্টের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানানো হচ্ছে। যে আইন হয়-ই নি, তার প্রয়োগ বন্ধ করে দেয়া দিতে পারে না আদালত।
এখানে উল্লেখ্য, প্রধান বিচারপতির ক্ষমতা খর্ব করা নিয়ে উত্থাপিত একটি বিল বাস্তবায়নে আদালতের সিদ্ধান্তের বিষয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে এ কথা বলেন শাহবাজ শরীফ।
তিনি বলেন, আমরা তিন সদস্যের বেঞ্চের সিদ্ধান্ত মানতে পারি না। আমরা চার বিচারকের সংখ্যাগরিষ্ঠ সিদ্ধান্ত মানবো।
Leave a Reply