১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারের হত্যার পর ক্ষমতাসী সরকারগুলো নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে ব্যস্ত ছিল বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ৭৫ পরবর্তী যেসব সরকার ক্ষমতায় ছিল তারা মানুষের কল্যাণে কোনো কাজ করেনি। সোমবার (১৫ মে) বেলা পৌনে ১২টায় শাহবাগে বিসিএস প্রশাসন একাডেমিতে আইন ও প্রশাসন কোর্সের সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের স্মৃতিচারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, হত্যা, ক্যু ও ষড়যন্ত্রের মধ্যে দিয়েই ৭৫ পরবর্তী সময়ে ক্ষমতার পালাবদল হয়।
সে সময় মানুষের বিচার চাওয়ার অধিকার ছিল না। মানুষের বেঁচে থাকার কোনো অধিকার ছিল না। ক্ষমতাসীনরা নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনে ব্যস্ত ছিলেন। সামরিক স্বৈরশাসকের রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে দেশে ফিরে আসি।
দেশের প্রতিটি ক্ষেত্র আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে জোর দেওয়ার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের সুযোগ সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি প্রশিক্ষণের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাসহ সব ক্ষেত্রই যাতে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত হয় সেজন্য সব পদক্ষেণ নেওয়া হয়েছে। দারিদ্রের হার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনতে কাজ করছে সরকার।
ক্ষমতায় থাকতে বিএনপি জঙ্গিবাদ ও দুর্নীতি করে দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে বলে মন্তব্য করেন সরকারপ্রধান।
দেশ যাতে পিছিয়ে না যায় সেদিকে প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের খেয়াল রাখার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের বেতন-ভাতা যা কিছু সব জনগণের কাছ থেকে আসে। তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কাজ করা সকলের কর্তব্য। এই কথা মনে রেখে সব সময় চলতে হবে। যারা প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, শপথ নিয়েছেন তাদেরকে এটুকু বলব, দেশের জনগণের সেবা করা এটাই সবচেয়ে বড় কাজ। আজকে বাংলাদেশ যে এগিয়ে যাচ্ছে তার গতির যেন অব্যাহত থাকে। আমার এইটুকু দাবি।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘মহকুমাগুলোকে জেলায় রূপান্তরিত করেছিলেন বঙ্গবন্ধু। আর প্রত্যেক জেলায় উন্নয়নের জন্য গভর্নর নিয়োগ করে সব প্রশাসনিক ব্যবস্থা নতুন ধারায় সূচনাও করেছিলেন তিনি। যাতে উন্নয়ন তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত হতে পারে, সেই ব্যবস্থাটাই তিনি নিয়েছিলেন। আমরা তার পদক্ষেপ অনুসরণ করেই কার্যক্রম পরিচালনা করছি। বর্তমান সরকারও স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে চলেছে। ’
তৃণমূল পর্যন্ত উন্নয়ন করাই সরকারের লক্ষ্য মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নের লক্ষ্যই ছিল তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত উন্নয়ন করা, এটা শুধু শহরভিত্তিক মানুষের জন্য না। আর তৃণমূলপর্যায়ে মানুষের উন্নতিটা যেন হয়, তাদের ক্রয়ক্ষমতা বাড়ানো, মাথাপিছু আয় বাড়নো এবং তাদের জীবনযাত্রার মান বাড়বে সেভাবেই সব পরিকল্পনা নিয়ে কাজ শুরু করা হয়। ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণ করার পর এখনও আমরা ক্ষমতায় আছি, সেভাবেই কাজ করে যাওয়া হচ্ছে।
Leave a Reply