সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ২০২১ সালে মিয়ানমারে ক্ষমতা দখলের পর দেশটির জান্তা সরকার দু’বছরে অন্তত ১০০ কোটি ডলারের অস্ত্র কিনেছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
জাতিসংঘ প্রতিবেদনে বলা হয়, মিয়ানমারে জান্তাবাহিনীর ক্রমাগত নৃশংসতার প্রমাণ থাকার পরও তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অস্ত্র কেনা অব্যাহত রেখেছে। এসব অস্ত্রের মধ্যে প্রযুক্তি ও অস্ত্র নির্মাণে প্রয়োজনীয় কাঁচামালও রয়েছে।
বুধবার (১৭ মে) মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক টম অ্যান্ড্রুস দেশটির অস্ত্র কেনা সংক্রান্ত এ প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেন। এতে দেখা গেছে, অধিকাংশ অস্ত্রই কেনা হয়েছে রাশিয়া, চীন ও সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, মিয়ানমারে ব্যাপক নির্যাতন-নৃশংসতার প্রমাণ থাকার পরও দেশটিতে বিনা বাধায় ব্যাপকহারে অস্ত্র এবং অস্ত্র উৎপাদনের প্রয়োজনীয় কাঁচামাল প্রবেশ করেছে। ২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারির পর থেকে প্রতিবেদন তৈরির আগ পর্যন্ত জান্তা সরকার অন্তত ১২ হাজার ৫০০ বার বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র এবং সংশ্লিষ্ট কাঁচামাল ক্রয়ের আদেশ দিয়েছে। এছাড়া মিয়ানমারের পরিচিত প্রায় সব অস্ত্র ব্যবসায়ীই জান্তা সরকারের হয়ে কাজ করছে।
জাতিসংঘের প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, যে বৈচিত্র্যময় এবং যে পরিমাণ অস্ত্র মিয়ানমারের জান্তাবাহিনীকে সরবরাহ করা হয়েছে, তা এক কথায় আশ্চর্যজনক। এসব অস্ত্রের মধ্যে ড্রোন থেকে শুরু করে যুদ্ধবিমান এবং যোগাযোগ উপকরণ থেকে শুরু করে নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজ সবই রয়েছে।
মিয়ানমারে সামরিক বাহিনীর অভ্যুত্থানের পর ব্যাপক সংকটের সূত্রপাত হয়। দেশটির জান্তাবিরোধী রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। সরকার কঠোরভাবে এসব বিক্ষোভ-আন্দোলন দমন করে। এতে দেশজুড়ে সশস্ত্র বিদ্রোহ দেখা দিয়েছে। দেশের বিভিন্ন সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী জোট বেঁধে গঠন করে পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ)।
উল্লেখ্য, বর্তমানে পিডিএফ জান্তাবাহিনীর হাতে উৎখাত হওয়া বিরোধী রাজনীতিবিদদের সমন্বয়ে গঠিত পাল্টা জাতীয় ঐকমত্যের সরকারের ছত্রছায়ায় থেকে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে যাচ্ছে।
সূত্র: আল-জাজিরা
Leave a Reply