ঢাকার কেরানীগঞ্জে কোনাখোলা এলাকায় র্যাব পরিচয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ৭১ লাখ টাকা ডাকাতি মামলায় ৮ ডাকাতকে গ্রেফতার করেছে থানা পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে লুন্ঠিত ১০ লাখ নয় হাজার পাঁচশত টাকা, একটি বিদেশী রিভলবার দুই রাউন্ড তাজা গুলি, ঘটনায় ব্যবহৃত হাইএস মাইক্রো বাস,হ্যান্ডকাফ, পিস্তল সদৃশ খেলনা পিস্তল, ডাকাতদের ব্যবহৃত র্যাব লেখা কটি, একটি ওয়াকিটকি ও মোবাইল উদ্ধার করা হয়।
বুধবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান। তিনি জানান, ৩১ জানুয়ারি দুপুরে দোহারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী নাহিদ ও খোকন স্বর্ণ বিক্রি করার জন্য ঢাকার তাতিবাজারে যায়। স্বর্ণ বিক্রি শেষে নাহিদ ৪০ লক্ষ টাকা ও খোকন ৩১ লক্ষ টাকা সাথে নিয়ে সন্ধা অনুমান ৫ টার দিকে দোহারের উদ্দেশ্যে নবকলি বাসে উঠে। এরপরে সন্ধা অনুমান সাড়ে ৬ টার সময় তাদের বহনকারী নবকলি বাসটি ঢাকা-নবাবগঞ্জ রোডের কেরাণীগঞ্জ মডেল থানাধীন কোনাখোলা নামক স্থানে পৌছালে একটি সাদা হাইএস মাইক্রোবাস চলন্ত নবকলি বাসটিকে জোরপূর্বক থামায়। তারপর মাইক্রোবাস হতে কয়েকজন অজ্ঞাতনামা ডাকাত (র্যাবের কটি পরিহিত) বাসে উঠে যাত্রীদেরকে র্যাবের লোক পরিচয় দিয়ে ২ জন আসামীকে ধরতে আসছে বলে জানায়।পরে ডাকাত সদস্যরা বাসে বসে থাকা স্বর্ণ ব্যবসায়ী নাহিদ ও খোকনকে টাকার ব্যাগসহ জোরপূর্বক বাস থেকে নামিয়ে ডাকাতদের মাইক্রোতে তোলে। এরপর ডাকাতদল স্বর্ণ ব্যবসায়ী নাহিদ ও খোকনের চোখ-মুখ বেঁধে মারধর করে এবং অস্ত্র ঠেকিয়ে তাদের সঙ্গে থাকা নগদ ৭১ লাখ টাকা ডাকাতি করে দুই স্বর্ণকারকে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের নিমতলা নামক স্থানে হাইওয়ের পাশে ফেলে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় একদিন পর স্বর্ণ ব্যবসায়ী নাহিদ ও খোকন বাদী হয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় মামলা করেন। মামলার পরদিন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে কেরানীগঞ্জ (সার্কেল) অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাব উদ্দিন কবিরের সহযোগিতায় ও কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন অর রশিদ এর সমন্বয়ে গঠিত একটি চৌকস দল আভিযানে নামে। বাসের সিসি টিভির ফুটেজে ডাকাতির ফুটেজ দেখে ও তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় কেরাণীগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নারায়নগঞ্জ এবং ডিএমপির বিভিন্ন এলাকায় ধারাবাহিক অভিযান পরিচালনা করে ঘটনায় জড়িত ডাকাত চক্রের ০৮ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। আসামীরা হলেনঃ সুজন (৩৯), আলামিন রেহান, ড্রাইভার কবির (৪৬), মিল্টন (৪৩),জাবেদ সিরাজুল (৪০), নয়ন বাবু (২৮), কামাল (৪৫) ও আঃ রহমান সাজ্জাদ (৪৫) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
এছাড়া গ্রেফতারকৃত ডাকাতের স্বীকারোক্তিমতে তাদের বাসায় তল্লাশি অভিযান করে ডাকাতির ঘটনায় ব্যবহৃত বিভিন্ন আলামত, হাইএস মাইক্রো ও লুন্ঠিত নগদ টাকা উদ্ধার হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ডাকাত আলামিন রেহান এর স্বীকারোক্তিতে ডাকাত সুজন মন্ডলের হেফাজত থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি বিদেশী রিভলবার দুই রাউন্ড তাজা গুলি উদ্ধার করা হয়।
Leave a Reply