ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের কাজীপাড়া থেকে ১৫ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রীকে অপহরণের ১০ দিন পর ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করেছে র্যাব-৯-এর সিপিসি-১ হবিগঞ্জের সদস্যরা। শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার সুবিদপুর ইউপির আনোয়ারপুর গ্রাম থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়।
এ সময় অপহরণকারীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার বোরহান উদ্দিন (২৮) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া উপজেলার ভাটামাথা গ্রামের রফিক মিয়ার ছেলে। ভিকটিম সদর উপজেলার একটি স্কুলের ছাত্রী। তার বাড়ি সদর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে।
শুক্রবার দুপুরে উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্রীকে র্যাবের পক্ষ থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় হস্তান্তর করার পর পুলিশ তাকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করে।
বিকেলে র্যাব সিপিসি-১-হবিগঞ্জ থেকে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ওই স্কুলছাত্রীর বাবা র্যাব-৯-এর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগে করে জানায়, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রাত ১১টার সময় তার মেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় শহরের কাজীপাড়া থেকে অটোরিকশা দিয়ে শহরের কাউতলী যাওয়ার পর কাউতলী গ্রামের গলিপথে বোরহান উদ্দিনসহ তার ৩/৪ জন সহযোগী দেশীয় অস্ত্রের ভয়ে দেখিয়ে তাকে অপহরণ করে। পরে তিনি এ ঘটনায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানা ও র্যাব-৯-এর সিপিসি-১ হবিগঞ্জ ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব সদস্যরা ওই স্কুলছাত্রীকে উদ্ধারে অভিযানে ও ছায়া তদন্ত শুরু করেন।
এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ও তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় শুক্রবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে হবিগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার সুবিদপুর ইউপির আনোয়ারপুর গ্রাম থেকে স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার ও অপহরণকারী বোরহান উদ্দিনকে গ্রেফতার করা হয়।
এ ব্যাপারে র্যাব-৯-এর সিপিসি-১-হবিগঞ্জ ক্যাম্পের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মোহাম্মদ নাহিদ হাসান জানান, গ্রেফতার বোরহান উদ্দিন বিবাহিত ও তিন সন্তানের জনক। তিনি একজন লেবাসধারী ইমাম। তিনি সদর উপজেলার একটি মসজিদে ইমামতি করেন। স্কুলে যাওয়া-আসার পথে ওই ছাত্রীকে নানাভাবে ফুঁসলানোর চেষ্টা করে আসছিলেন। তাকে ফুঁসলাতে না পেরে পরবর্তীতে সহযোগীদের নিয়ে তাকে অপহরণ করেন। বোরহান উদ্দিন প্রকৃতপক্ষে একজন অপহরণকারী ও ধর্ষক। এর আগেও তিনি ১০ বছরের এক শিশুকে অপহরণ ও ধর্ষণের জন্য অভিযুক্ত হন। তার বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩-এ একটি ধর্ষণ ও অপহরণ মামলা চলমান রয়েছে। ওই মামলায় তিনি দীর্ঘ ১১ মাস হাজতবাস করে জামিনে মুক্ত হয়ে আবারো একই ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয়েছেন।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সোহরাব আল হোসাইন বলেন, শুক্রবার দুপুরে র্যাবের পক্ষ থেকে উদ্ধার হওয়া স্কুলছাত্রী ও গ্রেফতারকৃত বোরহান উদ্দিনকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে ভিকটিমকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ও বোরহান উদ্দিনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
Leave a Reply