শনিবার রাত ৮টার দিকে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেই বিভীষিকাময় ঘটনার বর্ণনা দেন তিনি। এ সময় জলদস্যুদের ছোড়া গুলিতে চোখের আঘাতের যন্ত্রনায় চিৎকার করে কাঁদছেন তিনি। আহত ৯ জেলেও চিকিৎসাধীন।
এর আগে শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে পাথরঘাটা থেকে ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে পায়রা বন্দর থেকে পশ্চিমে বয়া এলাকায় জলদস্যু বাহিনী একটি মাছ ধরা ট্রলারে হামলা চালায়। এ সময় ওই ট্রলারে ১৮ জেলেকে গুলি করে ও কুপিয়ে জখম করে। এ সময় সাগরে ঝাঁপ দিয়ে নিখোঁজ হন ৯ জেলে।
ফিরে আসা জেলেরা হলেন- মো. মিরাজ হোসেন, আফজাল হোসেন, আলমগীর হোসেন, রায়হান, আ. করিম, খোকন মিয়া, নুর মোহাম্মদ, মধু মিয়া ও আব্দুল হক।
নিখোঁজ জেলেরা হলেন- কাইউম জোমাদ্দার , ইয়াছিন জোমাদ্দার, আবুল কালাম, শফিকুল মাঝি, খাইরুল ইসলাম, আবদুল আলীম, ফরিদ ও আবদুল হাই। অপর জেলের নাম পাওয়া যায়নি।
জেলে মধু মিয়া বলেন, প্রথমে আমাদের ট্রলারের পিছনে ধাক্কা দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি করে। এতে আমার বাম চোখে লাগে। আমরা চিৎকার করলে ট্রলারে উঠে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। এ সময় জলদস্যুদের হাত থেকে বাঁচতে আমি ট্রলারের পিছনের টয়লেটের মধ্যে ঢুকে দরজা আটকিয়ে দেই। তারপরও দরজা ভেঙে আমাকে টেনে বের করে মারধর করে। কিছুক্ষণের পর দেখি আমাদের ট্রলারের অনেক জেলে নেই। তারা জলদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে সাগরে ঝাঁপ দেন।
তিনি আরো বলেন, জলদস্যুদের সঙ্গে তিনটি ট্রলার ছিলো। আমাদের ট্রলারে ১০ লাখ টাকার জাল ও অন্তত ৫ লাখ টাকার রসদ সামগ্রী নিয়ে যায়।
এদিকে ফিরে আসা জেলেরা বলেন, জলদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা পেতে সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়া ৯ জেলের জীবন নিয়ে শঙ্কিত তারা। তারা আদৌ বেঁচে আছেন কিনা সেটাও জানি না।
জেলা মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ফিরে আসা জেলেদের পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা শেষে ছয়জনকে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। বাকি তিনজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল সেবাচিমে পাঠানো হয়েছে।
জেলা ফিশিং ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. দুলাল হোসেন বলেন, নিখোঁজ নয় জেলেকে উদ্ধারের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।
বরিশাল র্যাব-৮ এর কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদ বলেন, আমরা খবর পেয়েছি। নিখোঁজ জেলেদের অনুসন্ধানে কাজ করছি বলে জানান তিনি।
Leave a Reply