বগুড়া প্রতিনিধি,
বগুড়ার সোনাতলায় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে কুপিয়ে এক পা বিচ্ছিন্ন এবং অপর এক পা ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে স্থানীয় কয়েকজন যুবক।
গুরুতর আহত আব্দুর রশিদ (৪৫) নামের ওই ব্যক্তি বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। গত ৬ ডিসেম্বর সকালে সোনাতলা উপজেলার জোরগাছা ইউনিয়নের গ্রাম করমজার রাস্তায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত রশিদ গ্রাম করমজার মৃত ছালেক প্রামানিকের ছেলে এবং জোড়গাছা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৭ নং ওয়ার্ডের নির্বাহী কমিটির সদস্য। তিনি ওই উপজেলার সৈয়দ আহম্মেদ কলেজ স্টেশন এলাকায় অবস্থিত হক ওয়েল মিলে কর্মরত ছিলেন।
জোরগাছা ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও আহত রশিদের ভায়রা ভাই মোখলেছুর রহমান জানান, তাদের গ্রামের মিলন নামের এক ব্যক্তি দুই বছর আগে পাঁচ লাখ টাকার বিনিময়ে রশিদের ভাতিজি জামাই জাহিদকে দুবাই পাঠায়। সেখানে চুক্তি অনুযায়ী কাজ না পেয়ে জাহিদ গ্রামে ফিরে আসে। ওই ঘটনায় গত সেপ্টেম্বর মাসে গ্রাম্য শালিসে জাহিদকে ৭০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ বাবদ দেয় মিলন। গ্রাম্য শালিসে গ্রামের বাসিন্দা দুই ভাই রঞ্জু মিয়া ও মঞ্জু মিয়াকে না ডাকায় তারা মিলন ও রশিদের ওপর ক্ষুদ্ধ হয়। এ নিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর দুইপক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে রঞ্জু টেঁটা বিদ্ধ হয়। এ ঘটনায় মঞ্জু মিয়া বাদী হয়ে থানায় মামলা করে।
মোখলেছুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, রঞ্জুর চিকিৎসার জন্য ৩ লাখ টাকা খরচ হয়েছে বলে রশিদের কাছে সেই টাকা দাবি করা হয়। এ নিয়ে আবারও তাদের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। সেই বিরোধের জের ধরেই গত ৬ ডিসেম্বর রশিদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
তিনি বলেন, সোনাতলা থেকে তাৎক্ষণিক রশিদকে বগুড়ায় নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করার কারণে বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তেমন হৈচৈ হয়নি। এ কারণে প্রশাসন থেকেও আসামি গ্রেপ্তারে তেমন তৎপরতা নেই।
রশিদের স্ত্রী সুমি বেগম জানান, গত ৬ ডিসেম্বর সকালে রশিদ তার কর্মস্থলে যাওয়ার সময় মাঝ রাস্তায় ধারালো অস্ত্র নিয়ে তাকে ধাওয়া করা হয়। এক পর্যায়ে তাকে ধরে রাস্তার পাশে একটি জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে রাম দা দিয়ে দুই পায়ে কোপানো হয়। এতে রশিদের বাম পা হাটুর নিচ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং ডান পা ক্ষত-বিক্ষত হয়। সেখান থেকে রশিদকে উদ্ধার করে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় সোনাতলা থানায় ৬ জনের নামে মামলা করলে পুলিশ বাবুল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে।
বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজের (শজিমেক) অধ্যক্ষ ও শজিমেক হাসপাতালের অর্থপেডিক বিভাগের প্রধান ডা. রেজাউল আলম জুয়েল জানান, আব্দুর রশিদ নামের যে রোগী ভর্তি আছেন তার অবস্থা এখন আগের তুলনায় উন্নত হয়েছে। তার যা ক্ষতি হওয়ার তা হাসপাতালে নেওয়ার আগেই হয়েছে। তার একটি পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, যা প্রতিস্থাপন করা সম্ভব নয়। অপর একটি পা বিচ্ছিন্ন না হলেও আঘাতে ক্ষতবিক্ষত হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সোনাতলা থানার এসআই মাহমুদুল হাসান বলেন, মামলা দায়েরের পর বাবুল নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যরা পলাতক রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারেও চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
Leave a Reply