নেত্রকোণার কলমাকান্দায় ১৪ বছরের এক কিশোরীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের পর হত্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ডের রায় হয় পলাতক প্রধান আসামি আ. রাজ্জাক ওরফে জাকির হোসেনের (৬০)। ঘটনাটি ১৯৯৫ সালের উপজেলার কৈলাটি ইউনিয়নে ঘটে। ওই ঘটনার দীর্ঘ ২৮ বছর পর আ. রাজ্জাককে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৩।
রোববার রাতে গ্রেফতারকৃত পলাতক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে কলমাকান্দা থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর করে র্যাব-৩। সোমবার সকালে তাকে নেত্রকোণা জেলা আদালতে পাঠায় পুলিশ।
এর আগে গত শনিবার রাতে তাকে গাজীপুর জেলার গাছা থানা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
জানা গেছে, আব্দুর রাজ্জাক ২৮ বছর ধরে ছদ্মবেশে পলাতক ছিলেন। রোববার বিকেলে ঢাকার টিকাটুলীতে র্যাব-৩-এর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে ব্যাটালিয়ের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফ মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ১৯৯৫ সালের ঘটনা। নেত্রকোণার কলমাকান্দা উপজেলার হাঁপানিয়া কলমাকান্দা নামক গ্রামের রাজ্জাক তার প্রতিবেশী কিশোরীকে নানাভাবে উত্যক্ত করতেন। কিশোরী তার প্রস্তাবে রাজি না হলে রাজ্জাক তার সহযোগীদের দিয়ে তাকে অপহরণ এবং দলবদ্ধ ধর্ষণ করেন। পরে তাকে হত্যা করে মরদেহ বস্তায় করে মাটিতে পুঁতে রাখেন।
র্যাব-৩ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার ছয়দিন পর কিশোরীর মরদেহ পাউরা হাওর থেকে উদ্ধার করা হয়। ভিকটিম নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই তার পরিবারের লোকজন অনেক খোঁজাখুজি করেও তাকে পাননি। পরে মেয়েটির বাবা রুস্তম আলী সন্দেহভাজন আ. রাজ্জাকসহ কয়েকজনের নামে একটি গুম মামলা করেন। এরমধ্যে ভিকটিমের পরিবার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভিকটিমের মরদেহ চিহ্নিত করে। পরে কলমাকান্দা থানায় আ. রাজ্জাককে প্রধান আসামি করে মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে খুনসহ ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন নিহতের বাবা। ওই মামলায় আসামির মধ্যে দুজন পলাতক ছিলেন। বাকিদের আগেই গ্রেফতার করে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।
কলমাকান্দা থানার ওসি আবুল কালাম (পিপিএম) জানান, আসামি মৃত্যুদণ্ডের সাজা থেকে বাঁচতে নিজের নাম ও ঠিকানা পরিবর্তন করে গাজীপুরের গাছা থানার হারিকেন এলাকায় বসবাস করছিলেন। তার আসল নাম আব্দুর রাজ্জাক। তিনি জাকির হোসেন নাম নিয়েছিলেন। ২৮ বছর ধরে আত্মগোপনে ছিলেন তিনি। সম্প্রতি তথ্য-প্রযুক্তি ও সোর্সের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করে র্যাব-৩-এর সহযোগিতায় পলাতক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার সকালে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিকে নেত্রকোণা জেলা আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ওসি আবুল কালাম আরো জানান, আব্দুর রাজ্জাকের নামে কলমাকান্দা থানায় দুটি জিআর মামলার গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে।
Leave a Reply