1. admin@dainikprothomprohor.com : admin : News Desk
বরগুনার পাথরঘাটায় সাগরে ডাকাতির ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব - দৈনিক প্রথম প্রহর
সোমবার, ১১ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৩ পূর্বাহ্ন

বরগুনার পাথরঘাটায় সাগরে ডাকাতির ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব

  • প্রকাশিত: বুধবার, ২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৩

বরগুনার পাথরঘাটায় সাগরে ডাকাতির ঘটনায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে র‍্যাব। এ সময় তাদের কাছ থেকে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত অস্ত্র, বোটসহ নানা সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।
বুধবার সকালে চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান, র‍্যাব-৭ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম। এর আগে, মঙ্গলবার রাতে জেলার বাঁশখালী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন- বাঁশখালী উপজেলার পশ্চিম বড়ঘোনা এলাকার আলী আহম্মেদের ছেলে মো. কাইছার ওরফে কালু, একই উপজেলার পূর্ব বড়ঘোনা এলাকার আহম্মেদ সাবার ছেলে মো. জাহিদ, পশ্চিম বড়ঘোনার আলী চানের ছেলে মো. সেলিম এবং তার ছেলে মো. ইকবাল হোসেন।

র‍্যাব জানায়, শুক্রবার একটি ট্রলারে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে যাচ্ছিলেন বরগুনার ১৮ জেলে। ঐদিন রাতে পাথরঘাটা থেকে প্রায় ৮০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্ব দিকে ২৫-৩০ জনের একটি জলদস্যুবাহী দ্রুতগামী ট্রলার তাদের ট্রলারের পেছনে ধাক্কা দেয় এবং ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে। তখন ট্রলারে থাকা জেলেরা চিৎকার করলে জলদস্যুরা ট্রলারটিতে উঠে পড়েন। এরপর জেলেদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন।

জলদস্যুদের কবল থেকে বাঁচতে নয় জেলে গভীর সাগরে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিখোঁজ হন। অন্য একটি ট্রলারের জেলেরা আহত নয় জেলেকে উদ্ধার করে পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় শনিবার রাতে তাদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। বাকিদের পাথরঘাটা উপজেলা কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

এদিকে সোমবার বঙ্গোপসাগরে ঝাঁপ দেওয়া নয় জেলের মধ্যে চারজনকে উদ্ধার করা হয়। তাদের পাথরঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে একজনের মৃত্যু হয়।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মাহবুব আলম বলেন, আলোচিত এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত জলদস্যু ও ডাকাতদলকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে র‍্যাব-৭, র‍্যাব-৮, র‍্যাব-১৫ এবং র‍্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা যৌথভাবে কাজ শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার রাতে র‍্যাব-৭ ও র‍্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখার যৌথ দল বাঁশখালী উপজেলার গন্ডামারা, বড়ঘোনা, বাংলাবাজার, শৈলকুপাসহ আশপাশের এলাকায় অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারকৃতদের কাছ থেকে চারটি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ, দুইটি হাতুড়ি, তিনটি দা, একটি কিরিচ, দুইটি শাবল, জাল এবং দস্যুতার কাজে ব্যবহৃত বোট ও অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়।

তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত মো. কাইছার ওরফে কালুর কাছ থেকে বরগুনায় বোট হতে ডাকাতি করা একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে তথ্য-প্রযুক্তির মাধ্যমে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানা যায়- মোবাইল ফোনটি দস্যুতার কবলে পড়া আব্দুল করিম নামে এক জেলের। গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়- ঘটনার সময় বোটে উপস্থিত থেকে দস্যুতায় অংশ নেন কালু ও জাহিদ। গ্রেফতারকৃত সেলিম ওরফে ডাকাত সেলিম বোটের মালিক। তার বোট ব্যবহার করেই ডাকাতি কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

র‍্যাব-৭ এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) নুরুল আবছার বলেন, ১০ ফেব্রুয়ারি বোট নিয়ে সমুদ্রে গমন করে এ ডাকাত দল। তারা প্রথমে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া চ্যানেল এলাকায় একটি ডাকাতি সংঘটিত করেন। এরপর পুনরায় ডাকাতির উদ্দেশ্যে বরগুনা-পটুয়াখালী চ্যানেলের দিকে যান। সেখানেই দ্বিতীয় ডাকাতি সংঘটিত করেন। মূলত আগে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের উপকূলীয় অঞ্চলে ডাকাতি করতেন তারা। সেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যাপক তৎপরতার কারণে বর্তমানে বরিশাল, বরগুনা ও খুলনা উপকূলীয় অঞ্চলে ডাকাতি কার্যক্রম শুরু করেন। এসব অঞ্চল থেকে ডাকাতি করা মালামাল কক্সবাজার নিয়ে বিক্রি করতেন। ঘটনার দিন ১৮ জেলেকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম ও প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল লুটে নেয়ার কথা স্বীকার করেন তারা। গ্রেফতারকৃত মো. কাইছার ওরফে কালুর বিরুদ্ধে বাঁশখালী থানায় দুইটি ও মো. সেলিমের বিরুদ্ধে একই থানায় পাঁচটি মামলা রয়েছে। চক্রটিতে ১৮-২০ জন সদস্য রয়েছেন। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
কপিরাইট © ২০২২ দৈনিক প্রথম প্রহর. কম
ডিজাইন ও ডেভেলপ : ডিজিটাল এয়ার