বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের বাইনবুনিয়া গ্রামে কুল চাষ করে সফল হয়েছেন রাসেল নামে এক যুবক। ৫ একর জমিতে কাশ্মিরী আপেল কুল, বাওকুল, বলসুন্দরি ও ভরতসুন্দরি নামে ৪ জাতের কুল চাষ করে চলতি বছর প্রায় ১০ লাখ টাকা আয়ের স্বপ্ন দেখছেন তিনি। রাসেলের উৎপাদিত কুল ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হচ্ছে। এক সময়ের বেকার এই যুবকের এমন সাফল্যে সারা ফেলেছে এলাকায়। প্রতিদিন তার বাগান দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন ছুটে আসছে। তার এ সাফল্য দেখে বেকার অন্য যুবকরাও কুল চাষের দিকে ঝুঁকছেন।
উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের গোজখালি এলাকার বেকার যুবক আবু বক্কর সিদ্দিক রাসেল। কাজ করতেন ওয়ার্ল্ডফিস নামের একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায়। ২০২০ সালে করোনার সময় ওই সংস্থার প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে তিনি বেকার হয়ে পড়েন। বেকারত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য তিনি কৃষি ক্ষেত্রে কিছু করা যায় কিনা তা নিয়ে ভাবতে থাকেন। পরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সঙ্গে আলাপ করেন এবং তার পরামর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে কৃষি কাজে নেমে পড়েন। কিন্তু নিজেদের পর্যাপ্ত জমি না থাকায় প্রতিবেশীর ৫ একর জমি বার্ষিক চুক্তিতে ইজারা নিয়ে তা উঁচু করে প্রথমে মাল্টার চাষ শুরু করেন। কিন্তু মাল্টায় তিনি বেশি সুবিধা করতে পারেননি। লোকসানে পড়তে হয় তাকে। এতে কিছুটা মনোবল হারিয়ে ফেলেন রাসেল। এরমধ্যে কেটে যায় এক বছর।
২০২১ সালে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে এবং ইউটিউব দেখে তিনি নেমে পড়েন কুল চাষে। শুরুতে কুষ্টিয়ার মেহেরপুর এলাকার একটি বাগান থেকে সংগ্রহ করেন কাশ্মিরী আপেল কুল, বল সুন্দরি ও ভরত সুন্দরি প্রজাতির কুল গাছ। গাছগুলো রোপণের পর নিজেই পরিচর্যা শুরু করেন। সঠিক পরিচর্যায় গাছগুলো বেড়ে উঠে এ বছর ফল ধরেছে সব গাছে। তিনি এখন পর্যন্ত প্রায় ৮ লাখ টাকার বেশি কুল বিক্রি করেছেন। গাছে এখনও ২ লাখ টাকার কুল রয়েছে বলে তিনি জানান।
আমতলী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সিএম রেজাউল করিম বলেন, ‘রাসেল চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছিল। আমাদের পরামর্শে কুলবাগান করে সে এখন স্বাবলম্বী। কোনো ধরনের রাসায়নিক সার বা কীটনাশক ব্যবহার না করেই সে ভালো আকারের ও স্বাদের কুল পাচ্ছে। এ কারণে বাজারে তার কুলের চাহিদাও বেশি।’
Leave a Reply